চাঁদে আবার মানুষের পা পড়বে। ঐতিহাসিক সেই মুহূর্ত আসবে ২০২৪ সালে। নাসার সৌজন্যে চাঁদের মাটিতে মানুষের পা সর্বপ্রথম পড়েছিল ১৯৬৯ সালে এবং সর্বশেষ পড়েছিল ১৯৭২ সালে। সেসময় ব্যাটারি চালিত রোভারে চাঁদে কাজ করেছিলেন নভোচারীরা।

তবে ২০২৪ সালে আধুনিক প্রযুক্তির রোভারের মাধ্যমে নভোচারীরা চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করবেন। নাসার নতুন এই চন্দ্রাভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে আর্টেমিস।

এই মিশনের উপযোগী রোভার নির্মাণের কাজে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে জেনারেল মোটরস এবং লকহিড মার্টিন নামক দুটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান। লকহিড মার্টিন হলো অ্যারোস্পেস কোম্পানি, অন্যাদিকে জেনারেল মোটরস গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠান দুটি একত্রে রোভার বানানোর কাজ করছে বলে জানিয়েছে। আগের তুলনায় চাঁদের মাটিতে অনেক বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে পারবে, এমন রোভার তৈরি করছে তারা। প্রকল্পটি নাসার কাছে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হলে, রোভারটি আর্টেমিস অভিযানে ব্যবহৃত হবে। আর্টেমিস অভিযানের বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। প্রথম ধাপে এ বছরের নভেম্বরে মানবহীন একটি যান পাঠাবে নাসা। ২০২৪ সালে নভোচারীদের উপযোগী রোভার তৈরির নির্বাচিত প্রকল্পগুলোর তথ্য এ বছরের তৃতীয় বা চতুর্থ প্রান্তিকে প্রকাশ করবে নাসা। জমা পড়া প্রকল্পগুলো মূল্যায়ন করার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিতে যাবে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। চাঁদের মাটিতে পা রাখা আগের অ্যাপোলো মিশনের রোভারটি অবতরণ সাইট থেকে পাঁচ মাইলেরও কম দূরত্ব ভ্রমণ করতে সক্ষম ছিল। যার কারণে চাঁদের দূরবর্তী জায়গা যেমন উত্তর ও দক্ষিণ মেরু থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেননি সেসময়ের নভোচারীরা। চাঁদের পরিধি প্রায় ৭০০০ মাইল। জেনারেল মোটরস এবং লকহিড মার্টিন নতুন নেক্সট জেনারেশন রোভারের মাধ্যমে চাঁদে নভোচারীদের রেঞ্জ অর্থাৎ তাদের গতিবিধি মাত্রা বৃদ্ধি করতে একত্রে কাজ করছে।

লকহিড মার্টিনের চন্দ্র গবেষণা প্রকল্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, আর্টেমিস মিশনে নভোচারীরা চাঁদের আরও বেশি এলাকা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। যার ফলে বেশি পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। এসব নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরলে বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সাধারণ মানুষকে চাঁদের ব্যাপারে নতুন তথ্য দিতে পারবেন। এছাড়াও তাদের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রোভারে সেলফ ড্রাইভিং সিস্টেম থাকবে। এই ফিচার চালু করলে মানুষ ছাড়াও রোভার পরিচালনা করা সম্ভব হবে। তবে নতুন এই রোভার তৈরির সঠিক উপকরণ, চাঁদের মাটিতে এর চলাচলের রেঞ্জ এবং অন্যান্য ক্ষমতা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন কির্ক শিরম্যান।